ইফতারে রুহ আফজা খাওয়ার ৮টি উপকারিতা

ইফতারে রুহ আফজা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি যদি জানতে চান তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আমরা অনেকেই আছি যারা ইফতারে রুহ আফজা খাই কিন্তু এর উপকারিতা সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে জানি না। এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের ইফতারে রুহ আফজা খাওয়ার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো। 

ইফতারে-রুহ-আফজা-খাওয়ার-৮-টি-উপকারিতা

ইফতারে আমরা আমাদের সারা দিন রোজা রেখে পিপাসা দূর করার জন্য অনেকেই রুহ আফজা খেয়ে থাকি। সারাদিন রোজা রাখার পর রুহ আফজার শরবত আমাদের এক ধরনের প্রশান্তি এনে দেয় যা খেতে অমৃত স্বাদের। চলুন জেনে নিই ইফতারে রূহ আফজা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।

পেজের সূচিপত্র: ইফতারে রুহ আফজা খাওয়ার ৮ টি উপকারিতা

  • ইফতারে রুহ আফজা খাওয়ার ৮টি উপকারিতা
  • রুহ আফজায় কি কি উপাদান থাকে
  • রুহ আফজা খাওয়ার নিয়ম 
  • রুহ আফজা কি দিয়ে তৈরি 
  • রুহ আফজা কতটুকু নিরাপদ 
  • রুহ আফজা খেলে কি সাওয়াব হয় 
  • রুহ আফজা কি ক্ষতিকর
  • রুহ আফজায় কি ক্যালোরি বেশি 
  • রূহ আফজায় কি চিনি থাকে
  • রুহ আফজা কি পেটের জন্য ভালো 
  • রুহ আফজা কোন কোম্পানির ভালো 
  • রুহ আফজা কোথায় রাখলে ভালো থাকে 
  • গরম দুধে রুহ আফজা খাওয়া যাবে কি 
  • রূহ আফজা খেলে কি ওজন বাড়ে 
  • আফজা শব্দের অর্থ কি 
  • রোজা রেখে রূহ আফজা পান করা যাবে কি
  • রুহ আফজা কি গোলাপের সিরাপ 
  • রুহ আফজা কি নিরামিষ পণ্য 
  • রূহ আফজা কি হারাম 
  • শেষ কিছু কথা

ইফতারে রুহ আফজা খাওয়ার ৮ টি উপকারিতা

ইফতারে রুহ আফজা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি যদি বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলের এই অংশটুকু আপনার জন্য। করে আপনি ইফতারের সময় রূপ আফজা খাওয়ার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। আমরা জানি বছরে অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজান মাসে রুহ আফজা খাওয়ার প্রবণতা অনেক গুণ বেড়ে যায়। রমজান মাসে ইফতারের পর মুসলিম ভাই এবং বোনেরা এটি খেয়ে থাকেন। তাই এই সময় এর চাহিদা অনেক গুণ বেড়ে যায়। 

আরোও পড়ুন: ওজন কমাতে তোকমা খাওয়ার নিয়ম

রুহ আফজা এমন একটি স্বাস্থ্যকর পানীয় যা শিশু থেকে বৃদ্ধ প্রায় সকল বয়সের মানুষ নিঃসন্দেহে খেতে পারেন। কারণ এটি একটি নিরাপদ পানীয়। রুহ আফজা আমরা অনেকেই খেলেও এর উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। রূপ আফজা মূলত বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর ফলমূল শাকসবজি এবং গাছের শেকর দ্বারা তৈরি করা হয়। তাই এটি একটি নিরাপদ পানিও বলে দাবি করেন পুষ্টিবিদরা। এটি একটি নিরাপদ পানীয় হওয়ায় আপনি নিঃসন্দেহে খেতে পারেন। এটি খেলে কোন প্রকার কোন ক্ষতি হবে না। চলুন জেনে নিই ইফতারের রূহ আফজা খাওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা সম্পর্কে। 

ইফতারে রূহ আফজা খাওয়ার ৮ টি উপকারিতা 

  • পানি শূন্যতা দূর করে 
  • পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে 
  • কোন প্রকার ক্ষতিকর উপাদান নেই 
  • হজমের সমস্যা দূর করে 
  • ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার 
  • রক্ত সঞ্চালন গতিকে নিয়ন্ত্রণ করে 
  • পেটের সমস্যা দূর করে
  • শরীর ও মনকে প্রশান্তি দেই

পানি শূন্যতা দূর করে: সাধারণত রমজান মাসে আমরা সারাদিন রোজা রাখার কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে পারি না। যার ফলে আমাদের শরীরে পানি শূন্যতার সমস্যা দেখা দেয়। রমজান মাসে আমাদের শরীরের এই পানি শূন্যতা দূর করতে এবং পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে রূহ আফজার শরবত অত্যন্ত উপকারী একটি পানীয়। ইফতারের এক গ্লাস রূহ আফজার শরবত আমাদের সারাদিনের পানি শূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখে।

পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে: রূহ আফজা অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যসম্মত একটি পানীয়। কারণ এটি বিভিন্ন ধরনের ফল শাকসবজি এবং গাছের শিকড় দ্বারা তৈরি করা হয় বলে এটি অনেক পুষ্টিকর একটি খাবার। রমজান মাসে রোজা রেখে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে রূহ আফজা অত্যন্ত উপকারী একটি পানীয়।

কোন প্রকার ক্ষতিকর উপাদান নেই: রূহ আর যাই কোন প্রকার ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ বা কেমিক্যাল না থাকায় এটি একটি নিরাপদ খাবার। এটি একটি নিরাপদ খাবার হওয়ায় বাড়ির শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই নিশ্চিন্তে খেতে পারেন।

হজমের সমস্যা দূর করে: যাদের হজমের দুর্বলতা রয়েছে তারা নিয়মিত রূহ আফজা খেলে হজমের সমস্যা দূর হয়। এটি আমাদের হজম শক্তিকে বাড়িয়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার: রুহ আফজা একটি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার হওয়ায় এটি খেলে হজমের সমস্যা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য এর সমস্যা ও দূর হয়। এটি একটি ফাইবার সমৃদ্ধ পুষ্টিকর খাবার।

রক্ত সঞ্চালন গতিকে নিয়ন্ত্রণ করে: নিয়মিত রূহ আফজার শরবত রমজান মাসের খেলে এটি আমাদের রক্ত সঞ্চালন গতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

পেটের সমস্যা দূর করে: রুহ আফজা এমন একটি স্বাস্থ্যকর খাবার যা নিয়মিত খেলে রমজান মাসে আমাদের যে পেটের সমস্যা দেখা দেয় তা দূর করতে সাহায্য করে।

শরীর ও মনকে প্রশান্তি দেই: রমজান মাসে সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে আমাদের শরীর এবং মনকে প্রশান্তি দিতে ইফতারের রূহ আফজার এক গ্লাস শরবত অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার। এটি আমাদের শরীর এবং মনকে প্রশান্তি দিয়ে সতেজ করে তোলে।

রুহ আফজায় কি কি উপাদান থাকে

রুহ আফজায় কি কি উপাদান থাকে এটি জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমরা সকলেই জানি রুহ আফজা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি পানীয়। কিন্তু এতে কি কি উপাদান রয়েছে সেটি সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। ইফতারের রুহ আফজা খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের রূহ আফজায় কি কি উপাদান রয়েছে সেটি সম্পর্কে জানাবো। চলুন জেনে নিই।

রুহ আফজা সিরাপের উপাদান সমূহ: 

ফল: আপেল, কমলালেবু, সাইট্রোন, আনারস, বেরি, রাস্পবেরি, স্ট্রবেরি, লোগানবেরি, চেরি, কনকড, গ্রেপস, কালোজাম, তরমুজ এবং ব্ল্যাককুরান্ট ফল থাকে। 

গাছ গাছড়া: খুরফা বীজ ইউরোপীয় সাদা শাপলা, শাপলা ফুল, পদ্মফুল, তারা ফুল, কমন গ্রেপ, ভাইন এবং ধনের থাকে।

ফুল: গোলাপ, কমলা, কেওড়া এবং লেবু ফুল থাকে।

সবজি: রুহ আফজায় সাধারণত পালং শাক, মিন্ট, ধোন্দুল এবং গাজর থাকে।

মূল: ভেটিভার

রুহ আফজা খাওয়ার নিয়ম 

রুহ আফজা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের জানাবো। আমরা জানি রূহ আফজা অনেক উপকারী একটি পানীয়। তাই এটি খাওয়ার সময় নিয়মকানুন সম্পর্কে জানতে হবে। সঠিক নিয়মে রূহ আফজা না খেলে আমরা এতে থাকা পুষ্টি উপকার সম্পূর্ণরূপে পেতে ব্যর্থ হব। তাই অবশ্যই আমাদের রুহ আফজা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। রূহ আফজা অনেকেই অনেক রকম ভাবে খেয়ে থাকেন। জেনে নিই এর নিয়ম সম্পর্কে।

রুহ আফজা অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত এবং পুষ্টিকর একটি পানীয় হওয়ায় এটি চাইলে আপনি শরবত বানিয়ে খেতে পারেন আবার চাইলে সিরাপ হিসেবেও সরাসরি খেতে পারেন। এর কোন বাধা ধরা নিয়ম নেই। রুহ আফজা সর্বপ্রথম উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ এলাকায় সন্ধান পাওয়া যায়। এই এলাকাতেই এটি সর্বপ্রথম পাওয়া যেত। পরবর্তী সময়ে দিন দিন এজনপ্রিয়তাতা ধীরে ধীরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ায় বর্তমানে বাংলাদেশেও এটি একটি জনপ্রিয় পানীয় হয়ে উঠেছে।

আরোও পড়ুন: শিশুদের জন্য ছাগলের দুধের ১০টি উপকারিতা ও ৬ টি অপকারিতা

গাজিয়াবাদ এর বিভিন্ন এলাকা সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমন কি বাংলাদেশেও এই শরবত বর্তমানে সচরাচর পাওয়া যায়। বাংলাদেশের একেক অঞ্চলের মানুষ একেক উপায়ে রূহ আফজা খেয়ে থাকেন। তবে এদশের বেশিরভাগ অঞ্চলের মানুষ সাধারণত দুধ তরমুজ এবং বড় এর হাতে দুই থেকে তিন চামচ রুহ আফজা মিশিয়ে খেতে পছন্দ করে। অত্যন্ত সুস্বাদু একটি খাবার। রুহ আফজা যেহেতু স্বাস্থ্যকর একটি পানীয় তাই এটি আপনার সারাদিনের ক্লান্তিকে বা সারাদিনের কাজের ধকলকে এক নিমিষেই শেষ করে দিতে পারে।

আপনি যদি দুধ এর সাথে রূহ আফজা মিশিয়ে শরবত করে খেতে যান তাহলে প্রথমে দুধগুলোকে ভালোভাবে ফুটিয়ে সেটি সম্পূর্ণরূপে ঠান্ডা করে নিতে হবে। এরপর এর সাথে অল্প একটু তরমুজ, এক চা চামচ চিনি এবং এক চা চামচ রুহ আফজা ভালোভাবে মিশিয়ে একটি অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর পানিও তৈরি করে আপনি খেতে পারেন। সর্বোপরি আমরা বলতে পারি এটি খাওয়ার নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নাই তবে আপনি চাইলে যেকোনো উপায়ে এই স্বাস্থ্যকর পানিওটি খেতে পারেন।

রুহ আফজা কি দিয়ে তৈরি 

রুহ আফজা কি দিয়ে তৈরি সেটি যদি আপনার না জানা থাকে তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলের এই অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন। রুহ আফজা গোলাপ, কেওড়া, আপেল, আনারস, কমলা, ভেটিভার, ধোনে সহ আরো বিভিন্ন ধরনের ফল এবং ভেষজ নির্যাস এর সমন্বয়ে তৈরি। এই উপাদানগুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এ সকল পুষ্টিকর খাবারগুলো একসাথে সংমিশ্রণের মাধ্যমে রূহ আফজা তৈরি করা হয়।

রুহ আফজা কতটুকু নিরাপদ 

রুহ আফজা কতটুকু নিরাপদ এটি সম্পর্কে আপনি যদি জানতে চান তাহলে ইফতারের রুহ আফজা খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ইফতারের রুহ আফজা খাওয়া কতটুকু নিরাপদ সেটি নিয়ে প্রশ্ন করে থাকেন। আমরা দেখি বছরের অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজান মাসে রূহ আফজা বিক্রি এবং খাওয়া চাহিদা অনেক গুণ বেড়ে যায়। কারণ অনেক স্বাস্থ্য সচেতন মুসলিম পরিবার আছেন যারা সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারের সময় রুহ আফজা এর শরবত পান করে থাকেন। চলুন জেনে নিই রূহ আফজা কতটুকু নিরাপদ সেটি সম্পর্কে। 

রুহ-আফজা-কতটুকু-নিরাপদ

আপনি জানলে খুশি হবেন যে রুহ আফজায় কোন প্রকার কোন কেমিক্যাল অথবা রাসায়নিক পদার্থ বা কোন খারাপ পদার্থ ব্যবহার করা হয় না। যার ফলে আমরা এটিকে একটি সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ পানিও হিসেবে ধরে নিতে পারি। শুধুমাত্র বড় রায় নয় আমাদের ছোট বাচ্চারাও রুহ আফজার সিরাপ খেয়ে থাকেন। এটি অনেক স্বাস্থ্যসম্মত এবং নিরাপদ পানীয় হওয়ায় আপনি কোন প্রকার চিন্তাভাবনা ছাড়া নিঃসন্দেহে এটি পান করতে পারেন। 

রূহ আফজা যেহেতু একটি স্বাস্থ্যসম্মত পানিও তাই এটি সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারের সময় সরবত হিসেবে খেলে আমাদের সারাদিনের ক্লান্তি এবং পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে আমাদের শরীরে পানির সমতাকে বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং আমাদের রক্ত সঞ্চালন এর গতি বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রুহ আফজার এই পানীয়টি শুধুমাত্র ফলমূল এবং বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর শাক সবজির সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে বলে এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ।

রুহ আফজা খেলে কি সাওয়াব হয় 

রুহ আফজা খেলে কি সাওয়াব হয় এই প্রশ্নটি অনেকেই করে থাকেন। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছি যারা রুহ আফজা খেতে একেবারেই পছন্দ করেন না। কিন্তু তারা মনে করেন হয়তো রুহ আফজা খেলে অনেক বেশি সওয়াব পাওয়া যাবে যার ফলে তারা পছন্দ না করা সত্ত্বেও জোর করব এটি খেয়ে থাকেন। আজকের এই আলোচনায় আমরা এই বিষয়ের উপর ইসলাম কি বলে একটি সম্পর্কে জানব। বাস্তবিক অর্থে ইসলামে এর কি কোন যৌক্তিকতা আছে নাকি এটি শুধুমাত্র একটি গুজব এই পোস্টটি সম্পূর্ণরূপে পড়ার মাধ্যমে আমরা এটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবো। চলুন জেনে নিই।

বিভিন্ন ধরনের ইসলামিক বই এবং হাদিস থেকে জানা গেছে যে রুহ আফজার সাথে মূলত রোজা কিংবা রোজা রাখার পর এটি খাওয়ার ফলে সওয়াব এর কোন সম্পর্ক নাই। এটি ইফতারে না খেলে আপনার কোন ক্ষতি হবে বা আপনি সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবেন এটি কিন্তু নয়। এক কথায় আমরা যদি বলতে যাই তাহলে রুহ আফজা এর সাথে স্বভাবের কোন প্রকার কোন সম্পর্ক নেই। রুহ আফজা শুধুমাত্র একটি তরল স্বাস্থ্যকর পানীয় যা পান করলে আমাদের মনকে এবং শরীরকে প্রশান্তি দেয়।

তাই যারা মনে করেন ইফতারের রুহ আফজা খেলে হয়তো সভা পাওয়া যাবে তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই তাদের এই ধারণা সম্পূর্ণরূপে ভুল। এটি শুধুমাত্র একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পানীয় যা ইফতারের পর শরবত হিসেবে খেলে কিছুটা প্রশান্তি এবং পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। কারণ বিভিন্ন গবেষণা থেকে দেখা গেছে এটি অনেক স্বাস্থ্যকর একটি পানীয়। এটি সওয়াবের সাথে কোন সম্পর্কিত না থাকলেও যেহেতু পুষ্টিকর খাবার তাই আপনি চাইলে ইফতারের খাদ্য তালিকায় এটি রাখতে পারেন।

রুহ আফজা কি ক্ষতিকর

রুহ আফজা কি ক্ষতিকর এটি সম্পর্কে চলুন জেনে নিই। রুহ আফজা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তবে এটি খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই এটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে খেতে হবে। কারণ আপনি যদি কম পটাশিয়াম এবং কম ফসফেট জাতীয় ডায়েটে থাকেন তাহলে এটি বিবেচনা করে খেতে হবে। দেখতে হবে আপনি সারাদিনের অন্য কি কি খাবার খাচ্ছেন তার পরিপ্রেক্ষিতে কি পরিমান রূহ আফজা খাচ্ছেন সেটির ব্যাপারে। কারণ রুহ আফজা এই পানীয়টিতে খুব কম পরিমাণ প্রোটিন রয়েছে। যার ফলে এই পানীয়টি খুব সহজেই চিনিতে বেশি শোষিত হয়। তাই অবশ্যই আপনি আপনার ডায়েট চার্টের উপর নির্ভর করে তারপর রুহ আফজা খাবেন। তাহলে শরীরের ক্ষতি হওয়ার আর কোন সম্ভাবনা থাকবে না।

রুহ আফজায় কি ক্যালোরি বেশি 

রুহ আফজায় কি ক্যালোরি বেশি এটি নিয়ে অনেকেই চিন্তিত থাকেন। কারণ একজন স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তি কোন খাবার খেলে ক্যালরি বেশি এবং কোন খাবার এ ক্যালোরি কম এটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করে তারপর খেয়ে থাকেন। সকলের এ বিষয়টি জেনে থাকা উচিত। কারণ ক্যালরি বেশি হলে সেটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকার। 

তাই খাওয়ার আগে অবশ্যই ক্যালোরি কম না বেশি সেটি যাচাই-বাছাই করে তারপর খেতে হবে। আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের রূহ আফজায় পরিমাণ ক্যালরি রয়েছে সেটি সম্পর্কে জানাবো। হামদার্দ রূহ আফজায় তিন টেবিল চামচের অর্থাৎ প্রতি ৪৫ গ্রাম রূহ আফজার মধ্যে প্রায় ৯০ ক্যালরি রয়েছে

রূহ আফজায় কি চিনি থাকে

রূহ আফজায় কি চিনি থাকে এই কথাটি অনেকে জানতে চান কারণ রুহ আফজা খেতে অনেক মিষ্টি। যারা রুহ আফজায় তিনি আছে কিনা সেটি জানতে চান তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যে এতে চিনির পরিমাণ অনেক বেশি। ২ টেবিল চামচ অর্থাৎ প্রায় ৩৫ মিলি রূহ আফজায় প্রায় ৩৬ গ্রাম পরিমাণ চিনি থাকে। এটি একটি মিষ্টি স্বাদের পানীয়। কিন্তু এই খাবারটিকে সুষম খাবার বলা হয়। এটি মিষ্টি স্বাদের হওয়ার কারণে পরিমিত মাত্রায় খাওয়া উত্তম।

রুহ আফজা কি পেটের জন্য ভালো 

রুহ আফজা কি পেটের জন্য ভালো এটি সম্পর্কে পুষ্টিবিদরা কি বলে চলুন জেনে নিই। রূহ আফজা আমাদের শরীরের পাশাপাশি পেটের জন্যও অনেক বেশি উপকারী। এটি আমাদের বমি, বমি বমি ভাব এমনকি ডায়রিয়ার ক্ষেত্রেও বেশ ভালো কাজ করে। এটি আমাদের বদ হজমের সমস্যা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি আমাদের পেটের বদহজম, কিডনির সমস্যা, পেট ব্যথা ,অসারতা এবং অস্বস্তি ভাব কমাতে বেশ কার্যকরী। তাই আমরা বলতে পারি রূহ আফজা পেটের জন্য অনেক বেশি উপকারী এবং স্বাস্থ্যসম্মত।

রুহ আফজা কোন কোম্পানির ভালো 

রুহ আফজা কোন কোম্পানির ভালো এটি প্রত্যেকের জেনে থাকা উচিত। কারণ কোন কোম্পানির রুহ আফজা ভালো সেটি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা থাকলে ভেজালের মুখে পড়া সম্ভাবনা থাকে না। আমাদের দেশে যেহেতু ভেজাল জিনিসে ভরে গেছে তাই যেকোনো জিনিস কেনার পূর্বে অবশ্যই ভালো কোম্পানি এবং সঠিক পণ্য যাচাই-বাছাই করে তারপর কিনতে হবে।ইফতারের রূহ আফজা খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের কোন কোম্পানির রূহ আফজা বেশি ভালো সিটি সম্পর্কে জানাবো। 

হামদার্দ কোম্পানির রুহ আফজা অনেক বেশি ভালো এবং নিরাপদ। হামদার্দ কোম্পানির রুহ আফজার শরবত ৭৫০ মিলি ১৯০৭ সালে প্রথম প্রবর্তিত হয়। রূপ আফজা কে একটি ফল পূর্ণ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ পাঞ্চ হিসেবে ধরা হয়। গরমের দিনের জন্য একটি নিখুত ট্রিট। আমাদের দেশ থেকে শুরু করে অন্যান্য দেশেও এই পণ্যটি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে জনপ্রিয় একটি পানীয় হয়ে উঠেছে। এর স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা বিবেচনা করে এটি আরো বেশী জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাই আপনি চাইলে এই হামদার্দ কোম্পানির রুহ আফজা কিনে খেতে পারেন।

রুহ আফজা কোথায় রাখলে ভালো থাকে 

রুহ আফজা কোথায় রাখলে ভালো থাকে রুহ আফজা সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে এই কথাটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমরা অনেকেই অনেকদিনের ফ্রিজে ভরে সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। রুহ আফজাল ক্ষেত্রে ব্যাপারটি কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ রুহ আফজা কখনোই ফ্রিজে সংরক্ষণ করবেন না। এটি আমাদের ঘরের নরমাল তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করুন। তাহলে এর গুণগত মান বজায় থাকবে। এটি ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করার কোন প্রয়োজন নেই। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন সিল ভাঙ্গার পরবর্তী এক মাসের মধ্যে এটি ব্যবহার করে নিতে হবে। সীল ভাঙ্গার একমাস পর এটি ব্যবহার করা যাবেনা।

গরম দুধে রুহ আফজা খাওয়া যাবে কি 

গরম দুধে রুহ আফজা খাওয়া যাবে কি এটি সম্পর্কে জানতে চাইলে ইফতারে রুহ আফজা খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে চোখ রাখুন। দুধ অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি পানীয়। তাই গরম দুধের সাথে এবং পেস্তা বাদামের সাথে রূহ আফজা মিশিয়ে খেলে এটি আমাদের শরীরে একটি অতি শক্তিশালী ইমিউনিটি সিস্টেম তৈরি করে। 

আরোও পড়ুন: প্রতিদিন কত লিটার পানি পান করা উচিত

যার ফলে এটি অতি ঠান্ডা আবহাওয়াতেও আমাদের ঠান্ডা অনুভব করা থেকে বিরত থাকতে সাহায্য করে। প্রাকৃতিক উপায়ে আমাদের শরীরে গরম ভাব তৈরি করে। তাই আমরা বলতে পারি গরম দুধের সাথে রুহ আফজা মিশিয়ে খেলে এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী এবং শক্তিশালী একটি পানীয়। তাই আপনিও আপনার খাদ্য তালিকায় গরম দুধের সাথে রুহ আফজা মিশিয়ে নিয়মিত খেতে পারেন।

রূহ আফজা খেলে কি ওজন বাড়ে 

রূহ আফজা খেলে কি ওজন বাড়ে এটি সম্পর্কে অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে থাকেন কারণ রুহ আফজা খেতে মিষ্টি স্বাদের । রুহ আফজায় চিনির পরিমাণ বেশি থাকায় এটি খেয়ে ওজন বেড়ে যাবে এটি অনেকেই মনে করে থাকেন। তবে তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই রুহ আফজা একটি ক্যালোরি সমৃদ্ধ পানীয় নয়। তাই এটি মানুষের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য সুপারিশ কৃত ক্যালরির মাত্রার উপর জোর প্রদান করে। কারণ এটি ভীমটো এবং ট্যাং এর মত ঘুনিভূত হওয়া ফলের পানীয় খাবারের সময় অতিরিক্ত পরিমাণ ক্যালরি যোগ করে।

আফজা শব্দের অর্থ কি 

আফজা শব্দের অর্থ কি এটি যদি আপনি জানতে চান তাহলে আর্টিকেলের এই অংশটুকু আপনার জন্য। আফজা শব্দের অর্থ হলো সর্বোত্তম, নেতৃত্বের গুণাবলী, ভালো পরিকল্পনাকারী, প্রগতিশীল, কঠোর পরিশ্রমে, সর্বদা উচ্চ, অবিচল, দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং সমৃদ্ধির লক্ষ্য। আফজা শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে আরবি শব্দ থেকে।

রোজা রেখে রূহ আফজা পান করা যাবে কি 

রোজা রেখে রূহ আফজা পান করা যাবে কি এটি সম্পর্কে চলুন জেনে নিই। রোজা রেখে সারাদিন না খেয়ে থাকা হয় বলে শরীর অনেকটা নিস্তেজ এবং দুর্বল হয়ে পড়ে। আর রমজান মাসে একটানা একমাস রোজা রাখার ফলে শরীর অনেক বেশি দুর্বল হয়ে যায়। সারাদিন রোজা রেখে শরীরের ক্লান্তি দূর করার জন্য রূহ আফজা হতে পারে খুব ভাল একটি সমাধান। বিভিন্ন ধরনের ফল সবজি এবং গাছের শিকড় দ্বারা তৈরি করা হয় বলে এটি অনেক স্বাস্থ্যকর একটি পানীয়। ইফতারের প্রতিদিন রুহ আফজা খেলে এটি আমাদের শরীরকে সতেজ করে তোলে এবং পানির চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে। তাই আমরা বলতে পারি রোজা রেখে ইফতারে রুহ আফজা খাওয়া অনেক উপকারী।

রুহ আফজা কি গোলাপের সিরাপ 

রুহ আফজা কি গোলাপের সিরাপ সম্পর্কে চলুন বিস্তারিত জেনে নিই। অনেকেই মনে করেন রুহ আফজা হয়তো গোলাপের সিরাপ। কিন্তু তাদের এই ধারণা একেবারেই ভুল। কারণ রুহ আফজা শুধুমাত্র গোলাপের শরবত নয় এটি একটি রিফ্রেশিং পানীয় যা বিভিন্ন ধরনের ভেষজ উপাদান, ফলের রস, সবজি, গাছের শিকড় এবং চিনি শরবতের পাতন থেকে প্রকৃতি থেকে নেওয়া বিভিন্ন উপাদান থেকে তৈরি করা হয়ে থাকে। এই আরামদায়ক পানীয়টি সুগন্ধযুক্ত এবং স্বাদ যুক্ত করার জন্য বিভিন্ন রেসিপিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে প্রায় সকল দেশের মানুষ এটি শরবত হিসেবেই খেয়ে থাকেন।

রুহ আফজা কি নিরামিষ পণ্য 

রুহ-আফজা-কি-নিরামিষ-পণ্য

রুহ আফজা কি নিরামিষ পণ্য এটি নিয়ে অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগে থাকেন। বিশেষ করে যারা হিন্দু ধর্ম অবলম্বনকারী তারা আমিষ নিরামিষ বেছে খাওয়ার কারণে কোন খাবারটি আমিষ এবং কোন খাবারটি নিরামিষ সেটি বিচার বিবেচনা করে খেয়ে থাকেন। যারা রুহ আফজা নিরামিষ পণ্য কিনা সেটি জিজ্ঞাসা করে থাকেন তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই নিঃসন্দেহে রূপ আফজা একটি নিরামিষ পণ্য। তাই সকল ধর্মের মানুষ এটি খেতে পারেন।

রূহ আফজা কি হারাম 

রূহ আফজা কি হারাম এটি নিয়ে অনেকেই সংশয়ে থাকে। কারণ আমাদের যে কোন খাবার খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই হালাল-হারাম বেছে খেতে হবে। আপনি জেনে খুশি হবেন যে রুহ আফজা একটি সম্পূর্ণ হালাল পানীয়। এটি শুধুমাত্র একটি হালাল পানীয় তা কিন্তু নয় বরং এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক উপকারী এবং অবিচ্ছেদ্য একটি পানীয়। ‌প্রাকৃতিক বিভিন্ন উপকারী উপাদানের সমৃদ্ধিতে এই শরবত শত বছরের ঐতিহ্য একাই বহন করে আসছে। তাই আপনি নিশ্চিন্তে এই রূহ আফজার শরবত খেতে পারেন।

শেষ কিছু কথা

ইফতারে রুহ আফজা খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলে আমরা আপনাদের রূহ আফজা খাওয়ার উপকারিতা, এতে থাকা পুষ্টি উপাদান, রূহ আফজা খাওয়ার নিয়ম, এটি কি দিয়ে তৈরি, এটি কতটুকু নিরাপদ, এর ক্ষতিকর দিক সহ আরো অনেক বিষয় তুলে ধরেছি। আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি রূহ আফজা সম্পর্কে অনেক বিষয় সঠিক তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারবেন। আশা করি আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে। এরকম আরো ভালো ভালো আর্টিকেল পেতে ডিজিটাল আবিদা ওয়েবসাইটির সঙ্গে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল আবিদা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url