গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার ১২ টি উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে যদি জানতে চান তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা, অপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম সহ আরো অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

 

গর্ভাবস্থায়-চালতা-খাওয়ার-উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। এটি অনেক পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্য উপকারী একটি ফল হওয়ায় গর্ভবতীদের জন্য এই ফল অনেক উপকারী। গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার নানা ধরনের উপকারিতা সহ আরো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আর্টিকেলটি পরে আপনি চালতা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন।

গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার ১২ টি উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার ১২ টি উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের আজকের এ আর্টিকেলে আলোচনা করব। চালতা অনেক পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ স্বাস্থ্য উপকারী একটি ফল হওয়ায় এটি একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য অনেক উপকারী একটি ফল। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মাকে পুষ্টিকর খাবার খেতে দিলে গর্ভে থাকা সন্তানটির পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। সেই দিক থেকে বিবেচনা করলে চালতা অনেক পুষ্টিকর একটি খাবার। তাই গর্ভাবস্থায় চালতা খেলে গর্ভে থাকা সন্তান এবং মা উভয়েরই পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয় এবং সুস্থ থাকে। 

আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় মাদার হরলিক্স খাওয়ার ৭ টি উপকারিতা

একজন অন্য মানুষের তুলনায় একজন গর্ভবতী মাকে অনেক বেশি পুষ্টিকর খাবার খেতে দিতে হয়। মা পুষ্টিকর খাবার খেলে তবেই গর্ভে থাকা সন্তানটি সুস্থ থাকবে। আর গর্ভবতী মা পুষ্টিহীনতায় ভুগলে গর্ভে থাকা সন্তানটিও পুষ্টিহীনতায় ভুগবে। যা শিশুটির জন্য অনেক খারাপ। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত গর্ভবতী মাকে সঠিক নিয়মে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো। চলুন জেনে নিই গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।

গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার ১২ টি উপকারিতা 

  • গর্ভবতীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে 
  • গর্ভাবস্থায় হজমের সমস্যা দূর করে 
  • গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে 
  • আন্টি ইনফ্লামেটরি সমৃদ্ধ 
  • ভিটামিন সি সমৃদ্ধ 
  • ভিটামিন এ সমৃদ্ধ
  • গর্ভে থাকা শিশুর হার্ট ভালো রাখে
  • গর্ভে থাকা শিশুর শরীরে পুষ্টির যোগান দেয় 
  • গর্ভকালীন স্কার্ভি রোগের সমস্যা দূর করে 
  • গর্ভকালীন পেট ব্যথা দূর হয় 
  • গর্ভে থাকা শিশুর হাড় মজবুত করে 
  • গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে

গর্ভবতীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মেয়েদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কমে যায়। তাই এই সময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শরীর সুস্থ রাখতে চালতা খাওয়া প্রতিটা গর্ভবতী মায়েদের উচিত। গর্ভাবস্থায় চালতা খেলে গর্ভবতী মহিলাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি বেড়ে যায়।

গর্ভাবস্থায় হজমের সমস্যা দূর করে: গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের হজমের সমস্যা দেখা দেয়। যার ফলে একজন গর্ভবতী মা এবং গর্ভে থাকা সন্তান উভয়েরই স্বাস্থ্য দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। কিন্তু গর্ভাবস্থায় চালতা খেলে এটি গর্ভকালীন হজমের সমস্যা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে: গর্ভাবস্থায় প্রায় প্রতিটা মেয়েদের একটি সাধারণ সমস্যা হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা। গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে অনেক সময় পাইলসের সমস্যায় রূপ নেই। তাই এই সময় গর্ভবতীদের নিয়মিত চালতা খাওয়া উচিত। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত চালতা ফল খেলে এটি খাবার হজম করতে সাহায্য করে যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হয়।

আন্টি ইনফ্লামেটরি সমৃদ্ধ: চালতাই থাকা এন্টিনফ্লামেটরি উপাদান আমাদের শরীরের ব্যথা এবং ফোলা কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আমরা জানি গর্ভকালীন সময় গর্ভবতী মায়ের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ব্যাথা দেখা দেয়। তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত চালতা খেলে এই ব্যথা কিছুটা কম হয় বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ: অনেক সময় গর্ভবতী মায়েদের শরীর ফেকাসে, উসকো, খুসকো হয়ে যায় এবং শরীরের চামড়া উঠতেও দেখা যায়। এই সমস্যা গুলো সাধারণত ভিটামিন সি এর অভাবজনিত কারণে হয়ে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় চালতা খেলে ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ হয়। যার ফলে এই সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

ভিটামিন এ সমৃদ্ধ: গর্ভাবস্থায় ভিটামিন এ একজন গর্ভবতী মা এবং গর্ভে থাকা শিশুর রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এই ভিটামিন এ আমাদের চোখের দৃষ্টি বাড়াতে এক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। এই চালতাই রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ। যা গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য এবং গর্ভ থাকা শিশুর জন্য অনেক উপকার।

গর্ভে থাকা শিশুর হার্ট ভালো রাখে: গর্ভবতী মা গর্ভাবস্থায় চালতা খেলে গর্ভে থাকা শিশুর হার্ট ভালো থাকে। এটি গর্ভে থাকা শিশুর হার্ট ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

গর্ভে থাকা শিশুর শরীরে পুষ্টির যোগান দেয়: চালতা একটি অধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার হওয়ায় এটি গর্ভাবস্থায় খেলে গর্ভ হয়ে থাকা সন্তানটি পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি পায়।

গর্ভকালীন স্কার্ভি রোগের সমস্যা দূর করে: অনেক মেয়েদের গর্ভাবস্থায় স্কার্ভি রোগ দেখা যায়। এই রোগের সমস্যা দূর করতে চালতা বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি ফল।

গর্ভকালীন পেট ব্যথা দূর হয়: গর্ভকালীন পেট ব্যথা দূর করতে চালতার জুড়ি মেলা ভার। কারণ গর্ভকালীন সময় গর্ভবতী মায়েদের প্রচুর পরিমাণ পেট ব্যথা হয়। আর এই ব্যথা দূর করতে নিয়মিত চালতা খেতে পারেন।

গর্ভে থাকা শিশুর হাড় মজবুত করে: গর্ভবতী মা চালতা ফল খেলে এতে থাকা ক্যালসিয়াম শিশুর হাড় মজবুত করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: গর্ভকালীন সময় নিয়মিত চালতা ফল খেলে গর্ভবতী মায়ের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার নিয়ম 

গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে তারপর গর্ভবতীকে চালতা ফলটি খেতে দিতে হবে। কারণ গর্ভাবস্থায় যে কোন ফল বা খাবার খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করার জরুরী। তাই চালতা খাওয়ার পূর্বেও কিছু সতর্কতা রয়েছে। গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা আমরা সকলেই জানি কিন্তু তাই বলে এটি আচার হিসেবে খাওয়া যাবেনা। বা দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষণ করা আছে এইরকম চালতার কোন খাবার খাওয়া গর্ভবতীর জন্য নিরাপদ নয়। 

গর্ভবতীদের জন্য অবশ্যই কাঁচা চালতা খাওয়া উত্তম। কারণ কাঁচা চালতাই রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আঁশ যা গর্ভবতীদের জন্য অনেক উপকারী। আপনি চাইলে কাঁচা চালতা সাথে অল্প পরিমাণ মসলাযুক্ত করে খেতে পারেন। কিন্তু তাই বলে কোনোমতেই এর সাথে শুকনা মরিচের গুড়া অথবা কাঁচা লবণ মিশিয়ে বা অতিরিক্ত মসলা জাতীয় খাবার দিয়ে খাওয়া যাবে না। সর্বোচ্চ হিমালয়া পিংক লবণ মিশিয়ে আপনি খেতে পারেন। এছাড়াও চাইলে অল্প পরিমাণ কাঁচা মরিচ দিয়ে খেতে পারেন।

একজন গর্ভবতীকে চালতা খেতে দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই উপরের উল্লেখিত প্রতিটা নিয়ম মেনে তারপর খেতে দিতে হবে। তাহলে ক্ষতি হওয়ার আর কোন সম্ভাবনা থাকবে না। অতিরিক্ত মসলা বা লবণ মরিচ যুক্ত করে খেলে গর্ভবতীদের পেটের সমস্যা থেকে শুরু করে গর্ভে থাকা সন্তানেরও অনেক ধরনের ক্ষতি হওয়া সম্ভব না থাকে। তাই অবশ্যই চালতা খাওয়ার পূর্বে সতর্কতা মেনে চলবেন। আর গর্ব অবস্থায় অল্প পরিমান চালতা খাবেন। অতিরিক্ত চালতা খেলে এটি টক জাতীয় খাবার হওয়ায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

চালতার বৈশিষ্ট্য

চালতার বৈশিষ্ট্য জানা থাকলে এটি সম্পর্কে আপনাদের জানা অনেক সহজ হবে। গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের চালতার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানাবো। চালতা ফলটি অত্যন্ত টক জাতীয় একটি ফল। বিশেষত এটি বাংলাদেশ ভারত এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অনেক বেশি জন্মে। এই ফলটির বাংলা নাম চালতা এবং ইংরেজি নাম Elephant Apple. 

এটি অপ্রকৃত জাতীয় একটি ফল। এই ফলটি আকারে সাধারণত ছোট হয়। অর্থাৎ এই ফলটি আকারে প্রায় ১০-১২ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ৫-১০ সেন্টিমিটার ব্যাস হয়ে থাকে। এই ফলের বাইরের অংশটি সবুজ অথবা হলুদ রঙের হয় এবং এর ভেতরের অংশটি মাংসল পুরু থাকে। এই ফলের ভেতরের অংশে ছোট ছোট আকারের বীজ থাকে। 

এটি একটি টক জাতীয় ফল হওয়ায় সাধারণত এর আচার বা চাটনি বানিয়ে খাওয়া হয়। যারা তরকারিতে টক খেতে ভালোবাসে তারা বিভিন্ন তরকারির মধ্যে কয়েক টুকরো চালতা দিয়ে রান্না করে খেয়ে থাকে। সাধারণত আমরা চালতা ফলের যে অংশটি খেয়ে থাকি সেটা আসলে একটি ফুলের বৃতি। প্রকৃত অর্থে ফলটি সাধারণত একটি বৃতির ভেতরে থাকে।

চালতার পুষ্টি উপাদান 

চালতার পুষ্টি উপাদান রয়েছে ব্যাপক পরিমাণ। অর্থাৎ এটি একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ অতি পরিচিত ঔষধি গুনাগুন সম্পূর্ণ একটি ফল। এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, শর্করা, ভিটামিন, বিটা ক্যারোটিন, রিবোফ্লোবিন আমিষ ভিটামিন সি সহ আরো বিভিন্ন ধরনের কার্যকরী পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং প্রয়োজনীয়। চলুন জেনে নিই চালতাই থাকা পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ সম্পর্কে।

প্রতি ১০০ গ্রাম চালতাই রয়েছে 

  • প্রোটিন ১.১ গ্রাম 
  • ফাইবার ৩ গ্রাম 
  • ক্যালোরি ২৫ 
  • কার্বোহাইড্রেট ৬৮ গ্রাম 
  • চর্বি ০.১ গ্রাম 
  • চিনি ৩.৬ গ্রাম 
  • ভিটামিন এ ১০০০ আইইউ
  • ভিটামিন সি ৪০ মিলিগ্রাম 
  • ক্যালসিয়াম ১০০ মিলিগ্রাম 
  • পটাশিয়াম ১৭০ মিলিগ্রাম 
  • আয়রন ১ মিলিগ্রাম

চালতার উৎপত্তি ও আকার

চালতার উৎপত্তি ও আকার সম্পর্কে চলুন জেনে নিই। সর্বপ্রথম চালতা দেখা যায় অর্থাৎ চালতা ফলের প্রথম জন্ম হয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। তবে বর্তমানে এই ফল বিভিন্ন দেশে বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে। 

  • বাংলাদেশ 
  • ভারত 
  • মালয়েশিয়া 
  • চীন
  • শ্রীলংকা 
  • ইন্দোনেশিয়া এবং 
  • ভিয়েতনাম

চালতা গাছটি সাধারণত মাঝারি আকারের এবং চিরহরিৎ বৃক্ষ জাতীয় একটি উদ্ভিদ জাতীয় গাছ। এ গাছের উচ্চতা হয় সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ১৬ মিটার পর্যন্ত। এ গাছের রং সাধারণত লালচে বর্ণের হয়ে থাকে। এর ফুল অনেক সুগন্ধময় এবং ফুলের ব্যাস ১৫-১৭ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।

কাঁচা চালতার ১৫ টি উপকারিতা 

কাঁচা চালতার উপকারিতা অনেক বেশি। আমরা চালতার উপকারিতা সম্পর্কে কমবেশি সবাই জেনেছি। তবে এটি অন্য যেকোনো উপায়ে খাওয়ার চেয়ে কাঁচা অবস্থায় খাওয়া সব থেকে বেশি পুষ্টিকর। চালতা কাঁচা অবস্থায় খেলে এর পুষ্টি উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়। এটি ঔষধি গুনাগুন সম্পূর্ণ ফল হওয়ায় প্রতিটা মানুষের জন্য এটি অনেক উপকারী। গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের কাঁচা চালতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো। 

কাঁচা-চালতার-১৫-টি-উপকারিতা

কাঁচা চালতা সরাসরি খেতে না পারলে এতে হালকা বিট লবণ ছিটিয়ে খেতে অনেক ভালো লাগে। কাঁচা চালতা প্রচন্ড পরিমাণ টক হওয়ায় এটি অনেকেই খেতে চায় না। তাই এটি কাঁচা অবস্থায় না খেয়ে অনেকেই চাটনি অথবা আচার করে খেয়ে থাকে। তবে চালতার আচার খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই মনে রাখবেন এটি পরিমান মত খেতে হবে না হলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। চলুন জেনে নিই কাঁচা চালতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। 

কাঁচা চালতা খাওয়ার ১৫ টি উপকারিতা 

  • লিভার ভালো রাখে 
  • হার্ট ভালো রাখে 
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে 
  • জ্বর, ঠান্ডা, সর্দি, কাশির জন্য উপকারী 
  • হজমে সহায়তা করে 
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে 
  • বাতের ব্যথা উপশম করে 
  • স্তন ক্যান্সার ও জরায়ু ক্যান্সারের জন্য উপকারী 
  • ছেলেদের শুক্রানু সল্পতা দূর করে 
  • কিডনি ভালো রাখে 
  • চর্মরোগ এবং ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী
  • রক্তের সংবহনতন্ত্র বা রক্ত চলাচল সঠিক রাখে 
  • হাড়ের সংযোগস্থল সুরক্ষিত রাখে
  • কানের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
  • রক্তস্বল্পতা দূর করে

লিভার ভালো রাখে: চালতাই রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম যা আমাদের লিভার ভালো রাখতে সাহায্য করে।

হার্ট ভালো রাখে: চালতাই থাকা পুষ্টি উপাদান, ক্যালসিয়াম এবং শর্করা আমাদের হার্ট ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে: ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে চালতার ক্ষমতা এক অসাধারণ। নিয়মিত চালতা খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

জ্বর, ঠান্ডা, সর্দি, কাশির জন্য উপকারী: অনেক সময় আমাদের সর্দি, কাশি, জ্বর, ঠান্ডা গলা ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু নিয়মিত কাঁচা চালতা খেলে এই সমস্যার সমাধান হয়।

হজমে সহায়তা করে: পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন বদহজম গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা পাকস্থলীর আলসার বা পেটের যাবতীয় সমস্যা সমাধানে চালতা খুব ভালো একটি ভেষজ উপাদান।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধান করতে কাঁচা চালতা খাওয়ার জুড়ি মেলা ভার।

বাতের ব্যথা উপশম করে: বয়স বাড়ার সাথে সাথে বাতের ব্যথা যেন এখন বর্তমানে মানুষের নিত্য সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বাতের ব্যথা দূরে রাখতে আমাদের খাবারের তালিকায় নিয়মিত চালতা রাখতে হবে।

স্তন ক্যান্সার ও জরায়ু ক্যান্সারের জন্য উপকারী: স্তন ক্যান্সার এবং জরায়ু ক্যান্সারের বিরুদ্ধে আমাদের শরীরে এক অদৃশ্য প্রতিরোধী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চালতার কার্যকারিতা ব্যাপক।

ছেলেদের শুক্রানু সল্পতা দূর করে: অনেক সময় অনেক ছেলেদের পরিমাণের তুলনায় শুক্রাণুর পরিমাণ অনেক কম থাকে। যার ফলে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। ছেলেদের এই শুক্রাণু স্বল্পতার সমস্যা দূর করে বীর্যতে শুক্রাণুর পরিমাণ বাড়াতে চালতা বেশ উপকারী।

কিডনি ভালো রাখে: কিডনি সমস্যা দূর করে কিডনি ভালো রাখতে চালতা বেশ কার্যকরী।

চর্মরোগ এবং ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী: যাদের চর্ম রোগের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত চালতা খেলে এই সমস্যা দূর হয়। এছাড়া এই ফলটি আমাদের ত্বকের জন্যও অনেক উপকারী। ত্বকের বার্ধক্য জনিত সমস্যা, দূর করতে সাহায্য করে।

রক্তের সংবহনতন্ত্র বা রক্ত চলাচল সঠিক রাখে: নিয়মিত চালতার রস খেলে এটি আমাদের শরীরে থাকা রক্ত পরিষ্কার করতে কাজ করে। আমাদের রক্তে থাকা অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রক্ত চলাচল সঠিক রাখে।

হাড়ের সংযোগস্থল সুরক্ষিত রাখে: চালতা আমাদের শরীরে থাকা হাড়ের সমস্ত সংযোগস্থল গুলো সুরক্ষিত রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এটি আমাদের হাড়ের জন্য বেশ উপকারী।

কানের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের মতে চালতা কানের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

রক্তস্বল্পতা দূর করে: চালতাই রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন যা আমাদের রক্তের লোহিত রক্ত কণিকার কার্যক্রমকে সচল করতে সহায়তা করে। যার ফলে আমাদের রক্তস্বল্পতা দূর হয়।

চালতা খাওয়ার ৩টি অপকারিতা 

চালতা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে আপনি যদি জানতে চান তাহলে গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশটুকু পড়ুন। এই অংশে আমরা আপনাদের চালতা খাওয়ার বিভিন্ন ধরনের অপকারিতা এবং ক্ষতির দিক সম্পর্কে জানাবো। চালতা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই এর অপকারিতা সম্পর্কে জেনে তারপর খাওয়া উচিত। 

আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার ২৬ টি উপকারিতা ও ১০ টি অপকারিতা

কারণ আমরা জানি চালতা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি খাবার। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন যে খাবারটির উপকারিতা রয়েছে তার কিন্তু কিছু ক্ষতির দিকেও রয়েছে। আর চালতা একটি টক জাতীয় ফল হওয়ায় এটি অতিরিক্ত পরিমাণ খেলে অবশ্যই শরীরের জন্য কিছুটা ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই অবশ্যই চালতা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জেনে থাকা উচিত। চলুন জেনে নিই।

চালতা খাওয়ার ৩ টি অপকারিতা

  • প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থাৎ বেশি পরিমাণ চালতা খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় 
  • অতিরিক্ত পরিমাণ চালতা খেলে এলার্জির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। 
  • প্রয়োজনের অতিরিক্ত চালতা খেলে অনেক সময় শরীরে অস্বস্তি ভাব দেখা দেয় ‌

চালতা খাওয়ার নিয়ম

চালতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে তারপর চালতা খাওয়া উচিত। কারণ নিয়ম সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে ভালোভাবে জানার পর চালতা খেলে শরীরের আর কোন ক্ষতি হওয়া সম্ভব না থাকে না। গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের চালতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। চলুন জেনে নিই।

চালতা একটি টক জাতীয় ফল। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা টক খেতে অনেক পছন্দ করে। তাই যারা টক খেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য চালতা অনেক পছন্দের একটি ফল। অনেকেই কাছে চলতা খেতে পছন্দ করে আবার অনেকে আছে যারা চালতার আচার বা চাটনি বানিয়ে খেতে খুব পছন্দ করে। 

তবে চালতা একটি অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং ঔষধি গুনাগুন সম্পূর্ণ ফল হওয়ায় এটি আপনি যেভাবেই খান না কেন সেভাবেই উপকার পাবেন। বিশেষ ধরনের পুষ্টি উপাদান এবং ঔষধি উপাদান পেতে হলে অবশ্যই আপনার খাদ্য তালিকায় মাঝে মাঝে চালতার আচার রাখতে পারেন। তাহলে আপনি আপনার শরীরে নানা ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

চালতার ভেষজ গুনাগুন

চালতার ভেষজ গুনাগুন সম্পর্কে ডাক্তাররা কি বলে চলুন জেনে নেই। চালতা অত্যন্ত উপকারী একটি ফল হওয়ায় এটি প্রত্যেকের খাওয়া জরুরী। চালতা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা সহ আরো নানা ধরনের অসুখের প্রতিকার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এতে প্রচুর পরিমাণ ভেষজ ঔষধি ও গুনাগুন রয়েছে। চলুন জেনে নিই চালতার ভেষজ গুনাগুন সম্পর্কে।

  • জ্বর ঠান্ডা সর্দি কাশি প্রভৃতিতে চালতা গাছের ছালের গুড়া অত্যন্ত উপকারী।
  • কচি চালতা রস করে খেলে এটি বাত ব্যথা উপশমের কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। 
  • চালতা গাছের মূল এবং কচি চালতা পাতার রস তৈরি করে খেলে এটি রক্ত আমাশয় উপশম করতে খুব ভালো কাজ করে। 
  • চালতাই রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শরীরকে আরো কর্মক্ষম করে তোলে। 
  • মুখের ঘা ছাড়াতে চালতার ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

চালতা পাতার ৫ টি উপকারিতা 

চালতা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি নিজেও অবাক হয়ে যাবেন। চালতা ফলের উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানলেও এর পাতাও যে মানব দেহের জন্য কতটা উপকারী সেটা অনেকেই জানেন না। গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের চালতা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো। মানবদেহে চালতা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে থাকা আমাদের প্রত্যেকের উচিত। 

কারণ চালতা পাতায় থাকা পুষ্টি উপাদান মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও এটি মানব দেহের বিভিন্ন রকম ভাইরাস দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চালতাই ভিটামিন সি এর পরিমাণ যেমন রয়েছে ঠিক তেমনি এর পাতাতেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। যার ফলে এই পাতা খেলে অথবা শরীরে লাগালে অনেক উপকার পাওয়া যায়। চলুন জেনে নিই চালতা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে। 

চালতা পাতার ৫ টি উপকারিতা

  • কচি চালতা পাতার রস করে অথবা চিবিয়ে এর রস খেলে রক্ত আমাশয় দূর হতে সাহায্য করে।
  • চালতা পাতা অথবা চালতা গাছের ছাল ভিজিয়ে খেলে এটি সর্দি, কাশি ও জ্বর উপশম করতে সাহায্য করে। 
  • মুখে কোন প্রকার ঘা অথবা স্কার্ভি রোগ হলে অবশ্যই চালতা ফল অথবা চালতার পাতা চিবিয়ে খাবেন। 
  • শরীরের কোন জায়গায় চামড়া উঠে গেলে চালতা এবং চালতা পাতার রস খেলে খুব দ্রুত এটি উপশম পাওয়া যায়। 
  • চালতা পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।

রক্ত আমাশয় দূর করতে চালতা পাতা ও মূলের উপকারিতা 

রক্ত আমাশয় দূর করতে চালতা পাতা ও মূলের উপকারিতা সম্পর্কে চলুন জেনে নিই। আমরা সকলেই জানি চালতা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। শুধুমাত্র চালতা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী তা কিন্তু নয় এই গাছের কচি পাতা এবং মূলে থাকা ঔষধি গুনাগুন রক্ত আমাশয় দূর করতে বেশ কার্যকরী। চালতাই থাকা ঔষধিও গুনাগুন আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময় করতে কাজ করে।

কারো রক্ত আমাশয় হলে দুশ্চিন্তা না করে চালতা গাছের কচি পাতা টাটকা পেড়ে বেটে রস করতে হবে। চালতা পাতার রসের সঙ্গে এক কাপ ঠান্ডা পানি ভালোভাবে মিশিয়ে প্রতিদিন দিনে দুইবার করে এই রস নিয়মিত খেলে খুব দ্রুত আমাশয় এর সমস্যা দূর হয়। এছাড়াও চলাফেরা করার সময় আমাদের হাত বা পা কোন কারণে মচকে গেলে এই গাছের মূল এবং কচি পাতা বেটে ভালোভাবে রস করে নিতে হবে। সেই রস মচকা জায়গায় কয়েকবার প্রলেপ দিলেই ব্যথা নিমিষেই দূর হয়ে যাবে।

কফ ও সর্দি কাশি দূর করতে চালতার ঔষধি গুনাগুন 

কফ ও সর্দি কাশি দূর করতে চালতার ঔষধি গুনাগুন অনেক বেশি। কারন আমরা সকলেই জানি চালতা একটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ পুষ্টিকর ফল। তাই চালতাই রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং অন্যান্য সকল পুষ্টি উপাদান। চিকিৎসকরা বলেন ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখলে এটি ঠান্ডা লাগার প্রয়োজনীয়তা দূর করতে সাহায্য করে। তাই যাদের অল্পতেই ঠান্ডা লেগে যায় অর্থাৎ অতিরিক্ত সর্দি কাশির প্রবণতা রয়েছে তাদের খাদ্য তালিকায় নিয়মিত চালতা ফলটি রাখা উচিত। 

ঠান্ডা এবং সর্দি, কাশি সমস্যা দূর করতে চালতা গাছের শুকনো ছাল গুড়ো করে এর সাথে এক গ্রাম পরিমাণ চিনি অথবা মিশ্রির সাথে মিশিয়ে আধা কাপ পরিমাণ হালকা কুসুম গরম পানির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়মিত দিনে একবার খেলে সর্দি কাশি ভালো হয়। এটি ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও নিয়মিত চালতা ফল খেলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে মনে করেন পুষ্টিবিদরা।

ত্বকের বার্ধক্য রোধ করতে চালতার উপকারিতা

ত্বকের বার্ধক্য রোধ করতে চালতার উপকারিতা রয়েছে ব্যাপক। কারণ চালতাই রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি যা আমাদের ত্বকের কোলাজেল ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুপরিচিত এই চালতা ফলটি নিয়মিত খেলে এটি আমাদের ত্বকের বার্ধক্য দূর করতে সাহায্য করে। চালতাই থাকা ভিটামিন সি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, স্বাস্থ্য উপকারী ফ্যাট এবং অ্যামাইনো এসিড আমাদের শরীরে থাকা খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ধ্বংস করে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

চালতাই থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের শরীরে থাকা খারাপ ব্যাকটেরিয়া এবং টক্সিন দূর করে আমাদের ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল এবং লাবণ্যময় করে তুলতে সাহায্য করে। এছাড়াও চালতাই থাকা ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং ফ্ল্যাভোনয়েড এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আমাদের ত্বকের বার্ধক্য রোধ করে ত্বককে সজীব রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই ফলে থাকা পুষ্টি উৎপাদন গুলো আমাদের ত্বকের কোলাজেন গঠনে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

চালতার আচার রেসিপি 

চালতার আচার রেসিপি সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের চালতার আচার এর রেসিপি সম্পর্কে জানাবো। বাড়িতে থাকা অল্প কিছু উপকরণ ব্যবহার করেই খুব সহজেই আপনি অনেক সুস্বাদু চালতার আচার বানিয়ে খেতে পারে। চালতার আচার তৈরির রেসিপি সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি এটি খুব সহজেই বানাতে পারবেন। 

চালতা একটি টক জাতীয় ফল হওয়ায় এর আচার তৈরি করতে কিছু পরিমাণ মিষ্টির প্রয়োজন হয়। তবে শুধুমাত্র মিষ্টি ব্যবহার করেই নয়, এতে আরো কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো দিয়ে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনি চাইলে এই চালতার আচার তৈরি করে সংরক্ষণ করতে পারবেন। চলুন জেনে নিই চালতার আচার তৈরি করতে কি কি উপকরণ এর প্রয়োজন হয় সেটি এবং এটি বানানোর পদ্ধতি সম্পর্কে। 

উপকরণ: 

  • চালতা ১০ টি 
  • চিনি ১ কেজি
  • লবণ স্বাদমতো 
  • শুকনো লাল মরিচের গুড়া পরিমাণ মতো 
  • হলুদ গুঁড়া ২ চামচ 
  • এলাচ দারুচিনি ১ চামচ 
  • জিরা গুড়া ২ চামচ 
  • পাঁচফোড়ন ১৫ চামচ
  • এলাচ ১৫ টি 
  • শুকনা মরিচ ২০ পিস
  • তেজপাতা ৫ পিস 
  • দারুচিনি ৫ পিস
  • সরিষার তেল ৫০০ গ্রাম

প্রস্তুত প্রণালী: 

  • প্রথমে চালতা ফলগুলো টুকরো টুকরো করে কেটে ভালোমতো ধুয়ে নিতে হবে। 
  • এরপর আচার তৈরির সমস্ত উপকরণ গুলো অর্থাৎ সমস্ত মসলাগুলো এক জায়গায় নিতে হবে। 
  • আগে থেকে কেটে রাখা চালতাগুলো এবার ভালোমতো জাল করে সিদ্ধ করে নিতে হবে। 
  • চালতা গুলো ভালোমতো সিদ্ধ হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে এর পানিগুলো ঝেরে নিতে হবে। 
  • এরপর একটি ফ্রাইং প্যানে সরিষার তেল গরম করে নিতে হবে। 
  • তেল গরম হয়ে আসলে মসলার সমস্ত উপকরণগুলো দিয়ে তেলে ভেজে নিতে হবে। 
  • মসলাগুলো ভাজা হয়ে গেলে সিদ্ধ করে রাখা চালতা গুলো এর মধ্যে দিয়ে ভালোভাবে জাল দিতে হবে। 
  • এরপর এরমধ্যে গুড়া মরিচ, এলাচ, দারুচিনি ও জিরা গুড়া দিয়ে ভালোভাবে নেড়েচেড়ে নিতে হবে। 
  • কিছুক্ষণ এইভাবে জাল করার পর এর মধ্যে স্বাদমতো অর্থাৎ যে যার ইচ্ছে মত চিনি দিয়ে ভালোমতো জাল করতে হবে। 
  • আচার হয়ে আসলে এর মধ্যে পাঁচফোড়ন এর গুড়ো মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়েচেড়ে নামিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে টক মিষ্টি ঝাল মজাদার এবং মসলাদার চালতা ফলের অসাধারণ আচার।

চালতার আচার সংরক্ষণ পদ্ধতি

চালতার আচার সংরক্ষণ পদ্ধতি না জানার কারণে অনেক সময় এটি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না। কারণ সঠিক নিয়ম যা জানা থাকলে এটি নষ্ট হয়ে যাবে। তাই দীর্ঘ সময় পর্যন্ত চালতা অথবা চালতার আচার সংরক্ষণ করে রাখার জন্য অবশ্যই এর সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জেনে থাকা জরুরী। গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা আর্টিকেলের এই অংশে চলুন জেনে নিই চালতার আচার সংরক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে। 

চালতার-আচার-সংরক্ষণ-পদ্ধতি

  • চালতার আচার দীর্ঘদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে চাইলে অবশ্যই এটিকে কাঁচের পাত্রে রাখতে হবে। 
  • আচার সারা বছর ধরে সংরক্ষণ করতে চাইলে অবশ্যই এটিকে ডুবু সরিষার তেলে ডুবিয়ে রাখতে হবে। তেল কমে আসলে আবার তেল দিতে হবে। আচারে সরিষার তেল ব্যতীত অন্য কোন তেল ব্যবহার করা যাবে না। 
  • আচার খাওয়ার সময় অবশ্যই চামচ ব্যবহার করতে হবে। হাত দিয়ে উঠিয়ে আচার খেলে এটি খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। 
  • চালতার আচার দীর্ঘদিন ভালো রাখতে চাইলে ফ্রিজে রেখেও এটি সংরক্ষণ করা যায়। 
  • আচার ভালো রাখার আরো একটি নিয়ম হচ্ছে এটি মাঝে মাঝে রোদে দিতে হবে। রোদে দিলে আচার দীর্ঘদিন ভালো থাকে।
  • আচারে যেন কোন পানি না পরে সেই দিকে নজর রাখতে হবে। কারণ আচারে পানি পড়ে গেলে আচার নষ্ট হয়ে যায়। 

উপরের উল্লেখিত এই নিয়মগুলো মেনে চললে চালতার আচার দীর্ঘদিন পর্যন্ত ভালো থাকে এবং চাইলে সারা বছর এই উপায় সংরক্ষণ করতে পারেন। যেহেতু চালতার আচার আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী সেহেতু এটি সারা বছর সংরক্ষণ করে আমাদের সকলের খাওয়া উচিত।

চালতা কি ধরনের ফল

চালতা কি ধরনের ফল এটি সম্পর্কে চলুন জেনে নিই। চালতা হচ্ছে একটি টক জাতীয় মৌসুমী ফল। এই ফলটি মৌসুমী ফল হওয়ায় এটি সারা বছর পাওয়া যায় না। সারা বছর এই ফল আচার করে খুব সহজেই সংরক্ষণ করে রাখা যায়। আজকের আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের চালতা কি ধরনের ফল সেটি সম্পর্কে জানাবো। এটি সম্পর্কে জানা থাকলে আপনাদের অনেক সুবিধা হবে। 

আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় ভাতের মাড় খাওয়ার ১৭ টি উপকারিতা ও ৫টি অপকারিতা

চালতা একটি ভারতবর্ষীয় ফল। যার ফলে এই ফলটিকে ভারতীয় ফল হিসেবে ডাকা হয়। চালতা একটি প্রচন্ড টক জাতীয় ফল তাই এটি দিয়ে খুব সহজেই আচার এবং চাটনি তৈরি করা হয়। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন উপায়ে চালতা ফলটি খেয়ে থাকেন। তবে চালতা যে উপায়েই খান না কেন এটি থেকে উপকার পাওয়া যাবেই। আসলে চালতা ফল খাওয়ার নির্দিষ্ট কোন নিয়ম কানুন নেই বললেই চলে। 

তবে মনে রাখবেন কাঁচা চালতার উপকারিতা বেশি চালতা উপকারী ফল হলেও এটি খুব বেশি পরিমাণ খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়। বেশি পরিমাণ চালতার আচার অথবা চাটনি খেলে নানা ধরনের পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই চালতা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই সতর্কতা মেনে এর অপকারিতা সম্পর্কে জেনে সঠিক নিয়ম মেনে তারপর চালতা খাবেন। তাহলে ক্ষতি হওয়ার আর কোন সম্ভাবনা থাকবে না।

শেষ কিছু কথা 

আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা সহ চালতার আরো অজানা অনেক গুণের কথা সঠিক তথ্যের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি চালতা সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন। আশা করি আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে। এরকম আরো ভালো ভালো আর্টিকেল নিয়মিত পেতে ডিজিটাল আবিদা ওয়েবসাইটটির সঙ্গে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল আবিদা নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url